বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন আমাদের অধিকার। এটি দেশের সার্বভৌমত্ব ও উন্নয়নের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। আমরা স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিক, আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করবো, অবকাঠামো গড়বো—এখানে বাইরের কারো হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারীর জলঢাকা স্টেডিয়ামে উপজেলা জামায়াতের আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, "আমরা অন্যের ব্যাপারে নাক গলাই না, তেমনি আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কারো হস্তক্ষেপ কাম্য নয়।"
আওয়ামী লীগ সরকারকে ফ্যাসিবাদী আখ্যা দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, "এই সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম আজও কারাগারে। আমরা কোনো নাটকীয়তা চাই না, তাকে মুক্তি দিয়ে জনসেবার সুযোগ দিন। যারা নিরাপরাধ মানুষদের দোষী বানিয়ে অন্যায় করেছে, আল্লাহ তাদেরকে জনগণের হৃদয় থেকে মুছে দিয়েছেন।"
তিনি আরও বলেন, "হাসিনা সরকার হাজার হাজার মা-বোনকে নিঃস্ব করেছে, সন্তানদের এতিম করেছে, মানুষের বাকস্বাধীনতা হরণ করেছে। তারা ‘সোনার বাংলা’র নামে দেশকে শ্মশানে পরিণত করেছে। তাদের শাসনামলে খুন, গুম, ধর্ষণ ও লুটপাট ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা।"
জামায়াতকে পরিকল্পিতভাবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে দমন করার অভিযোগ এনে তিনি বলেন, "১১ জন জামায়াত নেতাকে জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে। ৫ জনকে ফাঁসি এবং ৬ জনকে জেলেই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। আমরা এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।"
মীর কাসেম আলীর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "তিনি আমেরিকা থেকে সতর্কবার্তা সত্ত্বেও দেশে ফিরে এসেছিলেন, কারণ তিনি ছিলেন সাহসী, দেশপ্রেমিক ও নিষ্ঠাবান। যুবসমাজকে তিনি দক্ষ করে গড়ে তোলার কারিগর ছিলেন। অথচ তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে মিথ্যা মামলায়।"
ডা. শফিকুর রহমান জুলাই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু ও দৃশ্যমান বিচার দাবি করে বলেন, "আমরা প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং বিচার ছাড়া কোনো নির্বাচনে রাজি নই। জনগণ আর ফ্যাসিবাদী সরকারের অধীনে নির্বাচন দেখতে চায় না।"
সভায় সভাপতিত্ব করেন জলঢাকা উপজেলা জামায়াতের আমীর মোখলেছুর রহমান মাস্টার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপজেলা সেক্রেটারী মোয়াম্মার আল হাসান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের টিম সদস্য আব্দুর রশীদ, নীলফামারী জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার, ওবায়দুল্লাহ সালাফী, ড. খায়রুল আনাম, আন্তাজুল ইসলাম, এ্যাডভোকেট আল ফারুক আব্দুল লতীফ, প্রভাষক ছাদের হোসেন, মনিরুজ্জামান মন্টু, কামারুজ্জামান, মনিরুজ্জামান জুয়েল, খন্দকার আহমুদুল হক মানিক, মজিবুর রহমান এবং জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি তাজমুল হাসান।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাহবুবুর রহমান বেলাল, প্রভাষক আনোয়ারুল ইসলাম, আব্দুল কাদিমসহ স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ মকবুলার রহমান