ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে পহেলা বৈশাখে বের হওয়া বহুল আলোচিত শোভাযাত্রা এবার নতুন নামে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বহুদিন ধরে প্রচলিত ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামটি এবার আর ব্যবহার করা হচ্ছে না। পরিবর্তে শোভাযাত্রার নতুন নাম নির্ধারণ করা হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।
শুক্রবার সকালে চারুকলা অনুষদের ওসমান জামাল মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম শেখ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান, প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ নববর্ষ উদযাপন কমিটির সদস্যরা।
নাম পরিবর্তনের বিষয়ে শুরু থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক মহল থেকে জোরালো দাবি উঠেছিল। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে বারবার প্রশ্নের মুখে পড়েন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীও। তবে শেষ পর্যন্ত আয়োজক কর্তৃপক্ষ, অর্থাৎ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ কে ঘিরে চারুকলা অনুষদের শোভাযাত্রা এবার আরও বর্ণাঢ্য, বৃহৎ ও বহুমাত্রিক হতে যাচ্ছে। বিভিন্ন জাতিসত্তা, সংস্কৃতি ও শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে শোভাযাত্রাটি হয়ে উঠবে বৈচিত্র্যময় এক মিলনমেলা।
এবারের প্রতিপাদ্য— ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’—দিয়ে উদযাপন করা হবে বাংলা নববর্ষ। এতে প্রতিবছরের মতো থাকছে বিশাল আকৃতির প্রতীকী শিল্পকর্ম, মুখোশ ও প্রাণীর প্রতিকৃতি, যা বহন করবেন সমাজের নানা স্তরের মানুষ।
উল্লেখযোগ্য যে, আশির দশকে সূচিত এই শোভাযাত্রা ২০১৬ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক ‘বিশ্ব ঐতিহ্যের’ স্বীকৃতি পায়। দীর্ঘসময় ধরে এটি পরিচিত ছিল ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে, যা বাংলা সংস্কৃতির এক অনন্য বহিঃপ্রকাশ।
এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুধু শোভাযাত্রা নয়, রঙিন হবে চৈত্রসংক্রান্তির আয়োজনেও। রবিবার বিকেল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চারুকলার বকুলতলায় অনুষ্ঠিত হবে চৈত্রসংক্রান্তির উৎসব, যেখানে থাকবে গান, নৃত্য, লোকজ পরিবেশনা এবং প্রাণের উচ্ছ্বাস।
নতুন নাম, নতুন প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২—যেখানে আনন্দই হবে মুখ্য, ঐতিহ্য থাকবে সমানভাবে সম্মানিত।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ মকবুলার রহমান