রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস পেরিয়ে আবারও এলো খুশির দিন—পবিত্র ঈদুল ফিতর। রমজানের এক মাসব্যাপী সংযম সাধনার পর, আজ উৎসবের আমেজে মেতে উঠবে মুসলিম সম্প্রদায়। ঈদ ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাইকে এক কাতারে দাঁড় করায়, মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করে এবং ইসলামের সাম্যের সৌন্দর্যকে প্রসারিত করে।
দেশজুড়ে ঈদ উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা পেয়েছেন উৎসব ভাতা, আর পরিবারের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহর থেকে মানুষ ছুটে গেছেন গ্রামের বাড়িতে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘সকলকে ঈদ মোবারক! আশা করি, আপনারা নিরাপদে ও আনন্দের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করবেন।’ পাশাপাশি তিনি দরিদ্র-অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
ঈদের প্রধান জামাত ও প্রস্তুতি
ঢাকার জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে প্রধান ঈদের জামাত। এখানে প্রধান উপদেষ্টা নামাজ আদায় করবেন, আর বঙ্গভবনে ঈদের নামাজ পড়বেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে একসঙ্গে প্রায় ৯০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। আরামদায়ক কার্পেট বিছানো হয়েছে, সুপেয় পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এবং ভিভিআইপি গ্যালারিতে ২৫০ জনের বসার সুযোগ রাখা হয়েছে।
বিভিন্ন স্থানে ঈদের জামাত
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পাঁচটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে, প্রথমটি সকাল ৭টায় এবং শেষটি সকাল পৌনে ১১টায়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন আয়োজিত বৃহৎ জামাত অনুষ্ঠিত হবে আগারগাঁওয়ের পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে, যেখানে ১০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে সকাল ৮টা ও ৯টায় দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে, এবং কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে জমিয়তে আহলে হাদিসের প্রধান জামাত হবে সকাল সাড়ে ৭টায়। এছাড়া বুয়েট, বিভিন্ন আবাসিক এলাকা ও মসজিদেও ঈদের জামাতের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
সামাজিক সম্প্রীতি ও মানবিকতা
ঈদ কেবল আনন্দের দিন নয়, এটি দানের মাধ্যমে সমাজের অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর এক অনন্য সুযোগ। ইসলামic শিক্ষায় দান ও জাকাতের গুরুত্ব অপরিসীম, যা সমাজে ন্যায়বিচার ও সমতা প্রতিষ্ঠা করে। ঈদের এই উৎসবে আমরা যেন আত্মীয়-স্বজন, দরিদ্র ও দুস্থদের খোঁজ নেই, তাদের মুখেও হাসি ফোটানোর চেষ্টা করি।
আনন্দমুখর ঈদ হোক সকলের জন্য শান্তি, সম্প্রীতি ও ভালোবাসার উৎস!