শক্তিশালী ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়েছে মিয়ানমার। চারিদিকে নিঃস্ব মানুষের আর্তনাদ— “আমাকে বাঁচান, আমাকে বাঁচান!” শুক্রবারের ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়েছে অসংখ্য ভবন, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে স্কুল, হাসপাতালসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো। তিন দিন পরেও পুরো এলাকায় শোকের ছায়া।
বিদ্যালয়ে নিহত শিশুদের করুণ পরিণতি:
একটি স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদছিলেন এক বৃদ্ধ। চূর্ণ-বিচূর্ণ ইটের সঙ্গে মিশে আছে ভাঙা চেয়ার-টেবিল, ছিন্নভিন্ন স্কুলব্যাগ। উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া স্থানীয়দের মতে, ভূমিকম্পের সময় স্কুলটিতে প্রায় ৭০ জন শিশু পড়াশোনায় ব্যস্ত ছিল। তবে এখন সেখানে শুধুই ধ্বংসস্তূপ।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ১২ শিশুসহ এক শিক্ষকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে স্থানীয়দের ধারণা, মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে ৪০ জন। এক বৃদ্ধা নাতনির লাশ পাওয়ার পর বলেন, “সৌভাগ্যবশত, আমরা আমাদের প্রিয়জনের মৃতদেহ অক্ষত অবস্থায় পেয়েছি।”
উদ্ধার অভিযান ও মানবিক সংকট:
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, মিয়ানমারে উদ্ধার ও চিকিৎসা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। হাসপাতালে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, অনেক স্থানে পর্যাপ্ত সরঞ্জামের অভাবে উদ্ধারকর্মীরা খালি হাতে ধ্বংসস্তূপ সরাচ্ছেন।
বিবিসির রিপোর্টার হতেত নাইং জাও জানান, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে সরকারি কর্মচারীদের আবাসিক ভবন, যেখানে পুরো নিচতলাটি ধসে গেছে। দুর্গন্ধ থেকে বোঝা যাচ্ছে সেখানে মৃতদেহ রয়েছে, কিন্তু উদ্ধার কার্যক্রম তেমন দেখা যাচ্ছে না।
হাসপাতালের বেহাল দশা:
রাজধানীর একটি ১,০০০ শয্যার প্রধান হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ছাদ ভেঙে পড়েছে। হাসপাতালের বাইরের তাঁবুতে প্রায় ২০০ আহত রোগীর চিকিৎসা চলছে। উদ্ধার ও পুনর্বাসনের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হলে মিয়ানমারের মানবিক সংকট আরও গভীর হবে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহযোগিতা জরুরি বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।