বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ অভিযোগ করেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রকৃতপক্ষে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথে হাঁটতে আগ্রহী নয়। তিনি বলেন, উপদেষ্টাদের আচরণ এবং বক্তব্য থেকে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয়, তারা দেশে গণতন্ত্রের স্বাভাবিক অগ্রযাত্রাকে রুদ্ধ করতে চায়।
শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। হাফিজ বলেন, “১৭ বছর ধরে আমরা একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছি, কিন্তু আজও তার কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। দেশের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা বলছেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কোনো আশাও নেই। সরকার নিজেরা তা প্রকাশ্যে বলছে না, তবে তাদের কার্যকলাপ ও উপদেষ্টাদের বক্তব্য থেকে আমাদের দৃঢ় ধারণা হচ্ছে—তারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আন্তরিক নয়।”
তিনি নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “বিএনপি সবসময় ইউনূস সাহেবের পক্ষে রয়েছে। আমরা মনে করি, যেসব শহীদ গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অবিলম্বে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু করা উচিত। তবে সরকারের অবস্থান দেখে মনে হচ্ছে, তারা ভিন্ন কোনো পথে হাঁটছে, যা আমাদের জন্য বোধগম্য নয়।”
মেজর হাফিজ অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় চরম অসংগতি প্রদর্শন করছে। তিনি বলেন, “ফেব্রুয়ারিতে আমাদের পাঁচজন প্রতিনিধি ও চারজন উপদেষ্টার সাথে একটি বৈঠক হয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। পরে সেই ঘোষণা প্রত্যাহার করা হয়। এখন আবার বলা হচ্ছে জুনে হবে। এসব সিদ্ধান্তহীনতা রাষ্ট্রকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।”
মানবিক করিডর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দেশবাসী উদ্বিগ্ন—আমরা কি জনগণের সম্মতি ছাড়াই কোনো যুদ্ধে জড়াতে চলেছি?”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “বিএনপি দেশের বৃহত্তম ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। আমাদের একমাত্র দাবি—একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। জনগণ যাকে ইচ্ছা ভোট দেবে, আমরা সেই রায় মেনে নেব।”
ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি তাকে পরামর্শ দিয়েছিলাম রাজনীতিতে না আসতে। যদি সে সেই পরামর্শ মেনে চলত, আজ হয়তো সে সম্মানের সঙ্গে ঢাকার রাজপথে চলাফেরা করতে পারত। এখন তার নিজের বাড়িতেই ফেরা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।”