মোঃ মকবুলার রহমান
স্টাফ রিপোর্টার:
আজ ৩০ মে, বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী। ১৯৮১ সালের এই দিনে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে একদল বিদ্রোহী সেনাসদস্যের হাতে তিনি নিহত হন।
জিয়াউর রহমান ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন সাহসী সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক। যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি এবং শহীদ হওয়ার আগ পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিবছর বিএনপি দিনটিকে শ্রদ্ধা ও মর্যাদার সঙ্গে স্মরণ করে।
১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলীতে জন্মগ্রহণ করেন জিয়াউর রহমান। জাতির এই বীর সন্তানকে স্মরণে বিএনপি এ বছর আট দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
গত ২০ মে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলোর যৌথসভা শেষে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ২৬ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি। সভায় ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন ব্যাংককে চিকিৎসাধীন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে—আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে শেরেবাংলা নগরে শহীদ জিয়ার মাজারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, দেশব্যাপী মসজিদে বিশেষ দোয়া এবং রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনাসভা।
বৃহস্পতিবারের আলোচনাসভায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এক ভিডিও বার্তায় বলেন, “দেশে গণতন্ত্র আজ বাধাগ্রস্ত। তবে আমরা আশাবাদী, খুব শিগগিরই বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সুবাতাস বইবে।” তিনি আরও বলেন, “সবার জন্য গণতন্ত্র ও উন্নয়নের পথে শহীদ জিয়ার রাজনীতিকে সম্মান জানাতে হবে।”
সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, “সরকারের উপদেষ্টারা জনসাধারণ থেকে বিচ্ছিন্ন। মানুষের দুর্ভোগ সম্পর্কে তারা সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ। সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ না করে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের আয়োজন করা উচিত।”
শহীদ জিয়ার স্মরণে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানায় দুঃস্থদের মাঝে খাদ্য ও বস্ত্র বিতরণ করবে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির পাশাপাশি সারাদেশে জেলা, উপজেলা ও পৌর ইউনিটগুলো আলোচনা সভা ও সেবামূলক কার্যক্রম পালন করবে।
এ উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, গুলশানের চেয়ারপারসনের কার্যালয়সহ সব দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির পতাকা অর্ধনমিত রাখা এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে।
বিএনপি ও তার অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলো শহীদ জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পোস্টার ও ব্যানার প্রকাশ করবে। পাশাপাশি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে স্মরণসংখ্যাও প্রকাশ করবে দলটি।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হলে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ধারায় সেনাপ্রধান হন জিয়াউর রহমান। একই বছরের ৭ নভেম্বর ‘সিপাহি-জনতার বিপ্লব’ তাকে রাজনৈতিক নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত করে। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল তিনি প্রধান সামরিক প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালের ২১ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জীবন ও আদর্শ স্মরণে অনুষ্ঠিত এই আয়োজন তার রাজনৈতিক, সামরিক এবং রাষ্ট্রীয় অবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করার সুযোগ তৈরি করেছে।